ভারতে মুসলিম নির্যাতনের মূল কারণ/// ৩য় পার্ট।
আমরা ধারাবাহিক আলোচনা করতে ছিলাম ভারতবর্ষে মুসলমানদের নির্যাতনের কারণ সমূহঃ আমাদের ধারাবাহিক আলোচনার আজ তৃতীয় পর্ব। আমরা আজকে আলোচনা করব মুসলমানদের উপর অত্যাচার এর প্রধান কারণ বা মূল কারণটা। আশা করা যায় আজকের পর্বে আমাদের সংক্ষিপ্ত এই চার্ট টি শেষ করা যাবে।
ইনশা আল্লা!
গাজওয়াতুল হিন্দঃ
ইনশা আল্লা!
গাজওয়াতুল হিন্দঃ
ভারতে মুসলিম নির্যাতনের অন্যতম এবং প্রধান কারণ হল, "গাজওয়াতুল হিন্দ" বা হিন্দুস্থানের জিহাদ। ইসলামে বলা হয়েছে, মুসলিমরা ভারতবর্ষে আক্রমণ করে বিজয় করবে এবং ভারতের শাসকদের পরাজিত করে, কোমরে দড়ি বেঁধে শিরিয়ায় নিয়ে যাবে। আর এই যুদ্ধ হবে কেয়ামতের আগ মুহূর্তে ঘটবে। এটা ইমাম আল-মাহদির সময় হবে। ইসলামি স্কলারগণ ধারণা করেন আমরা ইমাম মাহদীর আত্মপ্রকাশের ঠিক পূর্ব মূহুর্তে আছি। কেয়ামতের আগে যে সকল ঘটনা ঘটবে তার প্রায় সকল আলামত অলরেডি প্রকাশিত হয়েছে গেছে।
যদিও গাজওয়াতুল হিন্দ এর হাদিস গুলো সহিহ্, না দঈফ এ বিষয়ে মতবিরোধ রয়েছে। যেহেতু এই বিষয় নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। তাই আমি এই আলোচনায় গাজওয়াতুল হিন্দ এর সত্যতা অথবা মিথ্যা বিষয়ে আলোচনা করব না। কারণ যে বিষয়ে আমার জ্ঞান নাই সে বিষয়ে আলোচনা না করাই শ্রেয়। তবে বিষয়টি আমার পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত রেখেছি এবং এ বিষয়ে হয়তোবা সময় পেলে ইনশাআল্লাহ আর্টিকেল লিখব।
যাই হোক আজকে ভারতে যা ঘটছে তার অন্যতম কারণ হচ্ছে গাজওতুল হিন্দ। তারা মনে করে মুসলমানরা যদি ভারতবর্ষ আক্রমণ করে এবং ভারতবর্ষে যে 17-18 লাখ মুসলিম রয়েছে তারা সকলে যোগদান করলেই ভারত বর্ষকে রক্ষা করা যাবে না, মানি মুসলমানদের হাত থেকে। তাই তারা মনে করে যদি আমরা এর আগে মুসলমানদের সংখ্যা কমিয়ে ফেলতে পারি অথবা তাদের কে ভারত থেকে বের করে দিতে পারি, তবে আমরা মুসলমানদের বিজয় কে ঠেকিয়ে দিতে পারব। তাই হিন্দুত্ববাদী গুলো সংগঠিত হচ্ছে, দলে দলে তারা মন্দিরকর্তৃক আর এস বাহিনী গঠন করে এবং বিজেপি রাজনৈতিকভাবে মুসলিম নিধনের জন্য কমিটি গঠন করে এবং মুসলিম এলাকাগুলোতে পরিকল্পিতভাবে মুসলিমদের হামলা করে তাদের বাড়িঘর জান মাল ইজ্জত আব্রু সবকিছুর উপর হামলা করেছে। সম্প্রতি আপনার দেখেছেন বিজিবি একজন সংসদ তিনি ঘোষণা করেছিলেন যে, "হিন্দু যুবকদের উচিত 10 জন 10 জন করে কমিটি গঠন করে মুসলিম নারীদেরকে ধর্ষন করা এবং ধর্ষণের পর তাদেরকে বাজারে ঝুলিয়ে রাখা হয়, যাতে মানুষেরা দেখে শিক্ষা নিতে পারে। এদেশকে রক্ষা করার আর কোন উপায় নেই।" তিনি আরো বলেন, "মুসলিম নারীদের উচিত! হিন্দু পুরুষদের কে নিজেদেরকে ধর্ষণ করতে দেওয়া সুযোগ দেওয়া।" এরপর তিনি বলেন, এছাড়া দেশকে রক্ষা করার কোন ব্যবস্থা নেই। এই কথাগুলো আমাদের কি মেসেজ দেয়? আমাদেরকে একটা মেসেজ দেয় যে, মুসলিমরা ভারতকে আক্রমণ করতে চাই এবং ভারতকে দখল করতে চাই।
আমরা যদি ধরেও নি মুসলিমরা ভারতবর্ষে আক্রমন করবে অথবা গাজওয়াতুল হিন্দ সংঘটিত হবে। তারপরও এর বাস্তবতা আলোচনা করার হক রাখে। কেনই বা এই যুদ্ধ সংঘটিত হবে যেখানে ইসলাম অন্যায় বা মানুষ হত্যা কি নিষিদ্ধ করে। তাহলে কেন অন্যায় বা ভারতবর্ষে আক্রমন করার কথা বলবে। এ প্রশ্নটা যদিও অনেকের মনে উদ্দেলিত হয়নি, কিন্তু এ প্রশ্নটা আমার বহু আগে উদ্দেলিত হয়েছিল। আমি সবসময় ভাবতাম ভারতবর্ষে যদি মুসলিমরা শান্তিতে থাকে তবে ইসলাম কেন অন্যায় বা ভারতবর্ষের যুদ্ধের কথা বলবে? এবং সেখানে যদি হিন্দু মুসলমান সম্প্রীতির বন্ধনে থাকে তবে সেখানে কেন ইসলাম শান্তির বিনষ্ট করা কথা বলবে? কেন যুদ্ধ সংঘটিত হবে? নাকি এর পিছনে কোন কারণ আছে? এই প্রশ্নটার জবাব পেতে আমাকে দীর্ঘ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। এখন ভারতবর্ষের উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণ করলে বুঝা যায়, কেন ভারতবর্ষে "গাজওয়াতুল হিন্দ" হবে বা হিন্দুস্তানের যুদ্ধ হবে? তা আর বলার প্রয়োজন রাখেনা। তা হল মুসলমানদের উগ্র হিন্দুত্ববাদের হাত থেকে রক্ষা করা ।
যেহেতু মুহাম্মদ সঃ মন থেকে কোন কথা বলতেন না। তিনি যা বলতেন তা ওহীর উপর নির্ভর করে বলতেন। আল্লাহ তাআলা তাঁর কাছে ওহী করেছিলে যে, একসময় ভারতবর্ষে মুসলিমরা আক্রমণ করবে এবং তারা ভারত বিজয় করবে, আর রাজাদের কোমরে দড়ি বেঁধে সিরিয়াতে নিয়ে যাবে। এখানে কারণটা বর্ণনা করা হয়নি
এই কথার মাঝে একটা জবাব লুকিয়ে আছে। "একসময়", একসময় বলতে, এখন নয়, যখন সময় হবে। একথা টা বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ দীর্ঘদিন মুসলিমরা সেখানে ভালো থাকবে, যখন মুসলমানদের ভালো থাকাটা খারাপ এ পরিণত হবে এবং মুসলমানদের জানমালের নিরাপত্তা হীন হয়ে যাবে, তখনই ভারতবর্ষের মুসলমানদের অনুরোধ অথবা তাদেরকে রক্ষা করার জন্য ইমাম মাহাদী কর্তৃক একদল বাহিনী পেরণ করা হবে। যারা গাজওয়াতুল হিন্দ কে সংগঠিত করবে। এই যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুজাহিদদের জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম দোয়া করেছিলেন। উল্লেখ্য যে এর পূর্বে আর একটা যুদ্ধের কথা বলা হয়েছিল । অধিকাংশ মুহাদ্দিসে কেরাম দের মতে, প্রথম যুদ্ধ টিন ৭২০ হিঃ কাশেম বিন আবু বকর নেতৃত্বে যা সংঘটিত হয়েছিল। যা সিন্ধু বিজয়ের মাধ্যমে শেষ হয়। আর দ্বিতীয় যুদ্ধ টি এখনো সংঘটিত হয়নি। তবে বিশুদ্ধ মত হল, যদি এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়, তা ইমাম মাহাদীর নেতৃত্বে সংগঠিত হবে। যদিও কিছু লোক মনে করেন এটা বিচ্ছিন্নভাবে সংগঠিত হতে পারবে। কিন্তু ইসলাম তা সমর্থন করে না এবং এই মতটা সঠিক নয়।
এখানে আমরা বুঝতে পারলাম মুসলমানরা ভারতে যতদিন শান্তিতে থাকবে, ততদিন গাজওয়াতুল হিন্দ সংঘটিত হবে না। যখন মুসলমানদের জান এবং মাল ও নিরাপদ হয়ে যাবে, যখনি তাদের টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাবে, তাদেরকে যেকোনোভাবে হত্যা করা হবে, তখনই তাদেরকে রক্ষা করার জন্য 'গাজওয়াতুল হিন্দ" কে সংগঠিত করা হবে এবং দলে দলে মুসলিম গা এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করবেন। মুসলমানদের বিজয় নিশ্চিত করবে। অথচ হিন্দুদের উল্টো পথে যাবারন কারণে "গাজওয়াতুল হিন্দকে" তরান্বিত করছে। তারা তা বুঝেও না।
আজকে যদি আমরা ভারতবর্ষের যেদিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাব আরকানে কিভাবে মুসলমানদেরকে হত্যা করা হয়েছিল। বৌদ্ধ ভিক্ষুরা মুসলমানদের রক্ত মাংস খেয়ে পৃথিবীর বর্বরতার নিদর্শন দেখিয়েছিল এবং সারা পৃথিবী সে দৃশ্য দেখেছিল যা এখানে নতুন ভাবে বলার কিছুই নাই। এখন একই পদ্ধতিতে ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে মুসলমানদের তাড়ানোর জন্য বিজেপি এবং আর এস এস বাহিনী তৎপর হয়ে উঠেছে। তারা মুসলমানদেরকে হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করতে হবে, নয়তোবা ভারতবর্ষে ত্যাগ করতে হবে এই পদ্ধতিতে অবলম্বন করে তাদের হত্যা করাহচ্ছে এবং তাদেরকে আক্রমণ করা হচ্ছে। আমরা দেখতে পাই অনেক সময় প্রশাসনের সহায়তায় তারা এ ধরনের কাজ গুলো করে যাচ্ছে। যা আমাদেরকে জানিয়ে দিচ্ছি, "গাজওয়াতুল হিন্দ" কত নিকটে। কেন সংগঠিত হবে এবং কখন সংগঠিত হবে।
ইহুদিদের ষড়যন্ত্রঃ
আপনারা হয়তো জেনে থাকবেন, কেয়ামতের ঠিক আগ মুহূর্তে ইমাম মাহাদী এবং ঈসা আঃ নেতৃত্বে সারা বিশ্বে ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠা হবে। আর ঈসা আঃ নেতৃত্ব ইয়াহুদীদের কে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হবে। ইয়াহুদীরা সেই ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচতে এবং সম্ভাব্য ধ্বংস ঠেকাতে তারা এখনই বদ্ধপরিকর। তারা এখনই উল্লেখযোগ্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে শুরু করেছে। তারা জানে ভারতবর্ষের মুসলমানরা বিজয় করবে। ইসরাইল ও মুসলমানরা বিজয় করবে। তাই তারা বুঝতে পেরেছে মুসলমানরা হিন্দু ধর্মকে শেষ করবে এবং ইহুদীদেরকে শেষ করবে। তাই নিশ্চিহ্ন হওয়ার দিক থেকে তারা দুই দলই সমান। সেজন্য তারা একে অপরকে মিত্রতা গ্রহণ করেছে। তারা চাচ্ছিল ভারতবর্ষে হিন্দুদের কে সংগঠিত করে, মুসলমানদেরকে ভারতবর্ষে ঠেকিয়ে দিবে আর আরবে নিজেরা সংঘটিত হয় এবং মুসলমানদের মধ্যে কোন দোলন বা দিয়ে দিয়ে তারা নিজেরা জিতে যাবে।
সেই লক্ষ্যে তারা আর্কানে বুদ্ধদের কে সংগঠিত করে ছিল । সেখানে মুসলমানদের কি নিশ্চিহ্ন করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়। আপনারা হয়তো জেনে থাকবেন, আরকানে যখন মুসলমান নিধন চলে, তখন আরাকানে জাতিসঙ্ঘের হাই কমিশনার ছিল একজন ইহুদী মহিলা। তিনি জানতেন মুসলমানদেরকে জাতিগতভাবে নিশ্চিহ্ন করার কাজ চলছে । তিনি সেটাকে জাতিসংঘ কে অভিহিত না করে, গোপন করার চেষ্টা করেছিল। আর এই সত্য টা "আনান কমিশনের " রিপোর্টে বেরিয়ে আসে৷ তাই সেই সময় আনান রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর জাতিসংঘে কথা উঠেছিল পৃথিবীতে ধ্বংসযজ্ঞ সৃষ্টি করার জন্য ইহুদিরা প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে দায়ী। তাই তাদেরকে আর সহ্য করা যাচ্ছে না। এই কথার পর পরই আমেরিকান সরকার তথা ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষনা করেছিল, "আমরা জাতীয় সংঘ থেকে বেরিয়ে যাবো। " এর ব্যাখ্যা করেছিলেন আমেরিকান হাই কমিশনার এক মহিলা তিনি বলেছিলেনঃ "যুক্তরাষ্ট্র যেহেতু জাতিসংঘকে বেশি ডোনেট করে থাকে, তাই আমরা জাতিসংঘের কাছে একটু বেশি আবদার করতে পারে।" তাদের আবদার টা কি ছিল, সেটা সবার জানা আর ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন নাই। কারো আবদার যদি মানুষ হত্যা করা হয়, কোন জাতিগত বা নিশ্চিহ্ন করা হয়, তাহলে সেটাকে আবদার বলা যায় কি না, তাও একটু ভাবনার বিষয়।
এই ইহুদিরা ভারতের বর্তমানে পরীক্ষিত বন্ধুদের একজন ।ভারতের সাথে সব রকম সম্পর্ক বিদ্যমান। তাই তারা ভারতীয়দের কাছে নিজেদের মতাদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে এবং ভারতীয়রা তাদের প্রদর্শিত পথে চলছে।
সর্বশেষ আমি একটা কথা বলি ইসলাম বলেছে কেয়ামতের আগে গাজওয়াতুল হিন্দ হবে। কিন্তু ইসলামের বলে নাই, তোমরা গাজওয়াতুল হিন্দ কে সংগঠিত কর। অর্থাৎ গাজওয়াতুল হিন্দ কে গাজওতুল হিন্দ তোমরা শুরু করো। আমি বলতে চাচ্ছি, ইসলাম বলে নাই যুদ্ধ মুসলমানদের পক্ষে থেকে শুরু করতে হবে বরং ইসলাম বুঝাতে চাচ্ছিল। বিধর্মীরা এমন একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে, যাতে মুসলমানরা নিজেদের অস্তিত্ব সম্মান এবং ইজ্জত আব্রু রক্ষা করার জন্য লড়াই লিপ্ত হতে বাধ্য হবে। তাই আমি বলবো ভারতীয়দের উচিত ভারতবর্ষের শান্তি বাজি রাখা যতদিন ভারতবর্ষে শান্তি বাজিয়ে থাকবে ততদিন পর্যন্ত "গাজওয়াতুল হিন্দ" সংঘটিত হবে না। সুতরাং আমরা চেষ্টা করব যুদ্ধ যেন সংঘটিত না হয়। আমরা চাইব ভারতবর্ষের শান্তিপূর্ণ শান্তি বজায় থাকুক। কোন সভ্য জাতি নাই অথবা এমন কোন সভ্য মানুষ পাবেন না যারা যুদ্ধ কামনা করে।
তাই আমার শেষ কথা হল ভারতবর্ষে মুসলমানদের উপর আক্রমণ অথবা নির্যাতন এটা আজকের নয় যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। ইসলামের প্রথম থেকে এটা চলে আসছে ।কারণ হিন্দুদের প্রবৃত্তি হচ্ছে অন্য মতাদর্শকে নির্মূল করা। তাই তারি ধারাবাহিকতায় মুসলিমদের উপর নির্মল করার একটা প্রক্রিয়া দ্বারা চালিয়ে যাচ্ছে। এটা কোন আকস্মিক নয় বরং এটা চিরাচরিত নিয়ম হিন্দুদের জন্য।
তাদের দ্বিতীয় কারণ হলো ভয়ঃ আমি বলব ভয়ের কোন কারন নাই যত দিন ভারতবর্ষে তারা বিশেষ করে হিন্দুরা শান্তি বাঁচিয়ে রাখবে। ততদিন ভারতবর্ষে যুদ্ধ সংঘটিত হবে না। "গাজওয়াতুল হিন্দ" সংঘটিত হবে না। তাই ভারতবর্ষে গাজওয়াতুল হিন্দ রোধ করার জন্য ভারতের উচিত হবে, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা।
ইহুদিদের ষড়যন্ত্র ইয়াহুদীদের ষড়যন্ত্রে পরোচিত না হয় হিন্দু মুসলমানদের মাঝে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা করা হয়। তবেই গঠনমূলকভাবে এবং কার্যকরী ভাবে ভারতবর্ষের "গাজওতুল হিন্দ" ঠেকানো যাবে বলে আমি মনে করি। এবং অনেক অংশেে নিশ্চিত।
ইনশাআল্লাহ!!!
আমরা যদি ধরেও নি মুসলিমরা ভারতবর্ষে আক্রমন করবে অথবা গাজওয়াতুল হিন্দ সংঘটিত হবে। তারপরও এর বাস্তবতা আলোচনা করার হক রাখে। কেনই বা এই যুদ্ধ সংঘটিত হবে যেখানে ইসলাম অন্যায় বা মানুষ হত্যা কি নিষিদ্ধ করে। তাহলে কেন অন্যায় বা ভারতবর্ষে আক্রমন করার কথা বলবে। এ প্রশ্নটা যদিও অনেকের মনে উদ্দেলিত হয়নি, কিন্তু এ প্রশ্নটা আমার বহু আগে উদ্দেলিত হয়েছিল। আমি সবসময় ভাবতাম ভারতবর্ষে যদি মুসলিমরা শান্তিতে থাকে তবে ইসলাম কেন অন্যায় বা ভারতবর্ষের যুদ্ধের কথা বলবে? এবং সেখানে যদি হিন্দু মুসলমান সম্প্রীতির বন্ধনে থাকে তবে সেখানে কেন ইসলাম শান্তির বিনষ্ট করা কথা বলবে? কেন যুদ্ধ সংঘটিত হবে? নাকি এর পিছনে কোন কারণ আছে? এই প্রশ্নটার জবাব পেতে আমাকে দীর্ঘ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। এখন ভারতবর্ষের উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণ করলে বুঝা যায়, কেন ভারতবর্ষে "গাজওয়াতুল হিন্দ" হবে বা হিন্দুস্তানের যুদ্ধ হবে? তা আর বলার প্রয়োজন রাখেনা। তা হল মুসলমানদের উগ্র হিন্দুত্ববাদের হাত থেকে রক্ষা করা ।
যেহেতু মুহাম্মদ সঃ মন থেকে কোন কথা বলতেন না। তিনি যা বলতেন তা ওহীর উপর নির্ভর করে বলতেন। আল্লাহ তাআলা তাঁর কাছে ওহী করেছিলে যে, একসময় ভারতবর্ষে মুসলিমরা আক্রমণ করবে এবং তারা ভারত বিজয় করবে, আর রাজাদের কোমরে দড়ি বেঁধে সিরিয়াতে নিয়ে যাবে। এখানে কারণটা বর্ণনা করা হয়নি
এই কথার মাঝে একটা জবাব লুকিয়ে আছে। "একসময়", একসময় বলতে, এখন নয়, যখন সময় হবে। একথা টা বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ দীর্ঘদিন মুসলিমরা সেখানে ভালো থাকবে, যখন মুসলমানদের ভালো থাকাটা খারাপ এ পরিণত হবে এবং মুসলমানদের জানমালের নিরাপত্তা হীন হয়ে যাবে, তখনই ভারতবর্ষের মুসলমানদের অনুরোধ অথবা তাদেরকে রক্ষা করার জন্য ইমাম মাহাদী কর্তৃক একদল বাহিনী পেরণ করা হবে। যারা গাজওয়াতুল হিন্দ কে সংগঠিত করবে। এই যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুজাহিদদের জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম দোয়া করেছিলেন। উল্লেখ্য যে এর পূর্বে আর একটা যুদ্ধের কথা বলা হয়েছিল । অধিকাংশ মুহাদ্দিসে কেরাম দের মতে, প্রথম যুদ্ধ টিন ৭২০ হিঃ কাশেম বিন আবু বকর নেতৃত্বে যা সংঘটিত হয়েছিল। যা সিন্ধু বিজয়ের মাধ্যমে শেষ হয়। আর দ্বিতীয় যুদ্ধ টি এখনো সংঘটিত হয়নি। তবে বিশুদ্ধ মত হল, যদি এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়, তা ইমাম মাহাদীর নেতৃত্বে সংগঠিত হবে। যদিও কিছু লোক মনে করেন এটা বিচ্ছিন্নভাবে সংগঠিত হতে পারবে। কিন্তু ইসলাম তা সমর্থন করে না এবং এই মতটা সঠিক নয়।
এখানে আমরা বুঝতে পারলাম মুসলমানরা ভারতে যতদিন শান্তিতে থাকবে, ততদিন গাজওয়াতুল হিন্দ সংঘটিত হবে না। যখন মুসলমানদের জান এবং মাল ও নিরাপদ হয়ে যাবে, যখনি তাদের টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাবে, তাদেরকে যেকোনোভাবে হত্যা করা হবে, তখনই তাদেরকে রক্ষা করার জন্য 'গাজওয়াতুল হিন্দ" কে সংগঠিত করা হবে এবং দলে দলে মুসলিম গা এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করবেন। মুসলমানদের বিজয় নিশ্চিত করবে। অথচ হিন্দুদের উল্টো পথে যাবারন কারণে "গাজওয়াতুল হিন্দকে" তরান্বিত করছে। তারা তা বুঝেও না।
আজকে যদি আমরা ভারতবর্ষের যেদিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাব আরকানে কিভাবে মুসলমানদেরকে হত্যা করা হয়েছিল। বৌদ্ধ ভিক্ষুরা মুসলমানদের রক্ত মাংস খেয়ে পৃথিবীর বর্বরতার নিদর্শন দেখিয়েছিল এবং সারা পৃথিবী সে দৃশ্য দেখেছিল যা এখানে নতুন ভাবে বলার কিছুই নাই। এখন একই পদ্ধতিতে ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে মুসলমানদের তাড়ানোর জন্য বিজেপি এবং আর এস এস বাহিনী তৎপর হয়ে উঠেছে। তারা মুসলমানদেরকে হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করতে হবে, নয়তোবা ভারতবর্ষে ত্যাগ করতে হবে এই পদ্ধতিতে অবলম্বন করে তাদের হত্যা করাহচ্ছে এবং তাদেরকে আক্রমণ করা হচ্ছে। আমরা দেখতে পাই অনেক সময় প্রশাসনের সহায়তায় তারা এ ধরনের কাজ গুলো করে যাচ্ছে। যা আমাদেরকে জানিয়ে দিচ্ছি, "গাজওয়াতুল হিন্দ" কত নিকটে। কেন সংগঠিত হবে এবং কখন সংগঠিত হবে।
ইহুদিদের ষড়যন্ত্রঃ
আপনারা হয়তো জেনে থাকবেন, কেয়ামতের ঠিক আগ মুহূর্তে ইমাম মাহাদী এবং ঈসা আঃ নেতৃত্বে সারা বিশ্বে ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠা হবে। আর ঈসা আঃ নেতৃত্ব ইয়াহুদীদের কে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হবে। ইয়াহুদীরা সেই ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচতে এবং সম্ভাব্য ধ্বংস ঠেকাতে তারা এখনই বদ্ধপরিকর। তারা এখনই উল্লেখযোগ্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে শুরু করেছে। তারা জানে ভারতবর্ষের মুসলমানরা বিজয় করবে। ইসরাইল ও মুসলমানরা বিজয় করবে। তাই তারা বুঝতে পেরেছে মুসলমানরা হিন্দু ধর্মকে শেষ করবে এবং ইহুদীদেরকে শেষ করবে। তাই নিশ্চিহ্ন হওয়ার দিক থেকে তারা দুই দলই সমান। সেজন্য তারা একে অপরকে মিত্রতা গ্রহণ করেছে। তারা চাচ্ছিল ভারতবর্ষে হিন্দুদের কে সংগঠিত করে, মুসলমানদেরকে ভারতবর্ষে ঠেকিয়ে দিবে আর আরবে নিজেরা সংঘটিত হয় এবং মুসলমানদের মধ্যে কোন দোলন বা দিয়ে দিয়ে তারা নিজেরা জিতে যাবে।
সেই লক্ষ্যে তারা আর্কানে বুদ্ধদের কে সংগঠিত করে ছিল । সেখানে মুসলমানদের কি নিশ্চিহ্ন করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়। আপনারা হয়তো জেনে থাকবেন, আরকানে যখন মুসলমান নিধন চলে, তখন আরাকানে জাতিসঙ্ঘের হাই কমিশনার ছিল একজন ইহুদী মহিলা। তিনি জানতেন মুসলমানদেরকে জাতিগতভাবে নিশ্চিহ্ন করার কাজ চলছে । তিনি সেটাকে জাতিসংঘ কে অভিহিত না করে, গোপন করার চেষ্টা করেছিল। আর এই সত্য টা "আনান কমিশনের " রিপোর্টে বেরিয়ে আসে৷ তাই সেই সময় আনান রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর জাতিসংঘে কথা উঠেছিল পৃথিবীতে ধ্বংসযজ্ঞ সৃষ্টি করার জন্য ইহুদিরা প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে দায়ী। তাই তাদেরকে আর সহ্য করা যাচ্ছে না। এই কথার পর পরই আমেরিকান সরকার তথা ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষনা করেছিল, "আমরা জাতীয় সংঘ থেকে বেরিয়ে যাবো। " এর ব্যাখ্যা করেছিলেন আমেরিকান হাই কমিশনার এক মহিলা তিনি বলেছিলেনঃ "যুক্তরাষ্ট্র যেহেতু জাতিসংঘকে বেশি ডোনেট করে থাকে, তাই আমরা জাতিসংঘের কাছে একটু বেশি আবদার করতে পারে।" তাদের আবদার টা কি ছিল, সেটা সবার জানা আর ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন নাই। কারো আবদার যদি মানুষ হত্যা করা হয়, কোন জাতিগত বা নিশ্চিহ্ন করা হয়, তাহলে সেটাকে আবদার বলা যায় কি না, তাও একটু ভাবনার বিষয়।
এই ইহুদিরা ভারতের বর্তমানে পরীক্ষিত বন্ধুদের একজন ।ভারতের সাথে সব রকম সম্পর্ক বিদ্যমান। তাই তারা ভারতীয়দের কাছে নিজেদের মতাদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে এবং ভারতীয়রা তাদের প্রদর্শিত পথে চলছে।
সর্বশেষ আমি একটা কথা বলি ইসলাম বলেছে কেয়ামতের আগে গাজওয়াতুল হিন্দ হবে। কিন্তু ইসলামের বলে নাই, তোমরা গাজওয়াতুল হিন্দ কে সংগঠিত কর। অর্থাৎ গাজওয়াতুল হিন্দ কে গাজওতুল হিন্দ তোমরা শুরু করো। আমি বলতে চাচ্ছি, ইসলাম বলে নাই যুদ্ধ মুসলমানদের পক্ষে থেকে শুরু করতে হবে বরং ইসলাম বুঝাতে চাচ্ছিল। বিধর্মীরা এমন একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে, যাতে মুসলমানরা নিজেদের অস্তিত্ব সম্মান এবং ইজ্জত আব্রু রক্ষা করার জন্য লড়াই লিপ্ত হতে বাধ্য হবে। তাই আমি বলবো ভারতীয়দের উচিত ভারতবর্ষের শান্তি বাজি রাখা যতদিন ভারতবর্ষে শান্তি বাজিয়ে থাকবে ততদিন পর্যন্ত "গাজওয়াতুল হিন্দ" সংঘটিত হবে না। সুতরাং আমরা চেষ্টা করব যুদ্ধ যেন সংঘটিত না হয়। আমরা চাইব ভারতবর্ষের শান্তিপূর্ণ শান্তি বজায় থাকুক। কোন সভ্য জাতি নাই অথবা এমন কোন সভ্য মানুষ পাবেন না যারা যুদ্ধ কামনা করে।
তাই আমার শেষ কথা হল ভারতবর্ষে মুসলমানদের উপর আক্রমণ অথবা নির্যাতন এটা আজকের নয় যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। ইসলামের প্রথম থেকে এটা চলে আসছে ।কারণ হিন্দুদের প্রবৃত্তি হচ্ছে অন্য মতাদর্শকে নির্মূল করা। তাই তারি ধারাবাহিকতায় মুসলিমদের উপর নির্মল করার একটা প্রক্রিয়া দ্বারা চালিয়ে যাচ্ছে। এটা কোন আকস্মিক নয় বরং এটা চিরাচরিত নিয়ম হিন্দুদের জন্য।
তাদের দ্বিতীয় কারণ হলো ভয়ঃ আমি বলব ভয়ের কোন কারন নাই যত দিন ভারতবর্ষে তারা বিশেষ করে হিন্দুরা শান্তি বাঁচিয়ে রাখবে। ততদিন ভারতবর্ষে যুদ্ধ সংঘটিত হবে না। "গাজওয়াতুল হিন্দ" সংঘটিত হবে না। তাই ভারতবর্ষে গাজওয়াতুল হিন্দ রোধ করার জন্য ভারতের উচিত হবে, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা।
ইহুদিদের ষড়যন্ত্র ইয়াহুদীদের ষড়যন্ত্রে পরোচিত না হয় হিন্দু মুসলমানদের মাঝে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা করা হয়। তবেই গঠনমূলকভাবে এবং কার্যকরী ভাবে ভারতবর্ষের "গাজওতুল হিন্দ" ঠেকানো যাবে বলে আমি মনে করি। এবং অনেক অংশেে নিশ্চিত।
ইনশাআল্লাহ!!!
সমাপ্ত।




No comments