Header Ads

Header ADS

জৈব ও রাসায়নিক অস্ত্র, এবং এর ব্যাবহার ।

 জৈব রাসায়নিক  অস্ত্র সম্পর্কে আমার চিন্তা-চেতনা বহু আগ থেকে। এই সম্পর্কে আলোচনা করতে গেলে অথবা ভাবতে গেলে, আমার স্মৃতিতে একটা ঘটনা এসে ভিড় জমায়। যা ছিল একজন লোকের বোঝানোর ব্যর্থতা। পরিণামে তার মত গ্রহণ না করায় দ্বন্দ্ব। 




জৈব রাসায়নিক অস্ত্র সম্পর্কে আমি প্রথম অবগত হয়েছি 2012 সালে। যখন আমি আমার ছোট খালাম্মা বাসায় গিয়েছিলাম।  সেই দিন আমার খালাতো ভাই ফয়সাল তার সাথে কথা হচ্ছিল, উন্নত বিশ্বের অস্ত্র সমৃদ্ধকরণ সম্পর্কে। ফয়সাল আমার বয়সে ছোট। যেহেতু সে বিজ্ঞানের ছাত্র তাই তার সাথে বৈজ্ঞানিক কথায় মজা পাচ্ছিলাম। সেদিন সে আমাকে বলেছিল, আমেরিকা,চীন, রাশিয়া, ইসরাঈল, এক ধরনের ভাইরাস বা জীবাণু তৈরি করেছে। যা দিয়ে মানুষকে মেরে ফেলা যায়, একে বলা হয় 'জীবাণু অস্ত্র'। আমি কোন ভাবে তারে কথাটা প্রাথমিকভাবে আনতে পারলাম না। কারণ আমি জানতাম যে, মানুষ কোন পদার্থ অথবা কোন প্রাণ সৃষ্টি করতে পারে না। যেহেতু ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া এক ধরনের প্রাণী, তাই এই প্রাণ, মানুষ কোন ভাবে সৃষ্টি করতে পারবে না। এটা নিয়ে আমাদের দুজনের মাঝে ব্যাপক আলোচনা হয়, যুক্তি পাল্টা যুক্তি।  


ফয়সাল সেদিন আমাকে কোনভাবেই বুঝাতে সক্ষম হয়নি যে, মানুষ ব্যাকটেরিয়া অথবা ভাইরাস সৃষ্টি করতে পারে। যদিও আমি বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলাম না, এখনো নয়। তারপরেও আমি জানি যে, মানুষ কোন পদার্থ তৈরি করতে পারে না। মানুষ কেবল একটা পদার্থ থেকে আরেকটা পদার্থের রূপান্তর করতে পারে। মোট কথা হল, আদি পদার্থ ছাড়া মানুষ কোন কিছু সৃষ্টি করতে পারে না।

"অবশেষে আমি ফয়সালকে বলেছিলাম, নিশ্চয়ই তারা কয়েকটা ভাইরাস অথবা জীবাণু কে বিভিন্ন জীবাণুর সাথে মিশ্রণ করে সংকর প্রজাতির একটির ভাইরাস অথবা জীবন তৈরি করে। যা একজন মানুষ থেকে আরেকজন মানুষকে সংক্রমিত করে।" 
 
কিন্তু ফয়সালা সেদিন আমার এ কথার সাথে একমত হয়নি। সে বলেছিল যে, "মানুষ অণুজীব অথবা জীব সৃষ্টি করতে সক্ষম।" আমি একথা কে ডিনাই করে ছিলাম। তার আর আমার কথার অসমাপ্ত থেকে গিয়েছিল। একটি মাত্র কারণে যেটা ছিল মানুষ জীবাণু সৃষ্টি করতে পারে কিনা?


এরপর থেকে আমার সেই দিনের কথা যতবারই মনে পড়েছে, আমি ততবার ভেবেছি। আমি বিভিন্ন পদার্থবিদদের কাছে বহুবার প্রশ্ন করেছি। মানুষ কোন অণুজীব নতুন ভাবে সৃষ্টি করতে পারে কিনা? তবে তাদের কারো থেকে আমি সুস্পষ্ট ধারণা পাইনি। তবে তবে চট্টগ্রাম 'ওমেন কলেজের' 'প্রাণিবিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান' জনাব 'আবু শাহরিয়ার নোমান' তিনি আমাকে এক কথায় জবাব দিয়েছিলেন যে, 

"ডিএনএ'র জোজন বিয়োজনের মধ্যে একটা ভাইরাস কে আরেকটা ভাইরাসে রূপান্তর করা যায়।"

এর চেয়ে বেশি আমি কারো কাছ থেকে জবাব পাইনি। আমি বুঝে নিলাম যে, মানুষ একটা জীবের সাথে আরেকটা জীব বা জীবাণুর ডিএনএ সংযোজন বিয়োজন করে, জীবাণু কে আরো শক্তিশালী করে তুলতে পারে। এরপর থেকে ফয়লের সাথে আমার আর এ বিষয়ে কথা হয়নি।


আমার জীবনে চরম একটা খারাপ দিক আছে, তা হল, আমি কখনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ছাড়া মতকে পরিবর্তন করি নি। 

"আমি যে কোন মত কে ততক্ষণ পর্যন্ত আঁকড়ে ধরে থাকি যতক্ষণ তা আমার কাছে সত্য বলেই মনে হয়। "

এমন বহু লোক আছে যারা অন্তরে আমার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে, শুধু মাত্র 1 টি কারণ, তা হল, যে কোন বিষয়ে মত-দ্বিমত। 


"আমি আজীবনে কখনো নিজেকে ঠকাইনি, যা আমার মস্তিষ্কে ধরে না তা আমি কখনো গ্রহণ করিনি।"

তাইতো বহু মানুষ যারা, নিজেদের মত কে আমার উপর চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল, তারা আমার থেকে দূরে সরে গিয়েছে, এবং আমার সাথে শত্রুতা ও করেছে। আমার খুব কাছের বন্ধু ও শত্রু হতে দেরি হয়নি, শুধুমাত্র মতামতের দ্বিমতের কারণে। আমি জানিনা এমন একজন শত্রু কে আপনি খুঁজে পাবেন কিনা, যাকে আপনি প্রশ্ন করলে, সুনির্দিষ্ট কোনো উত্তর পাবেন, কেন সে আমার সাথে শত্রুতা করে? আমি বিশ্বাস করিনা। কারণ আমার জানামতে কারো সাথে আমার ব্যক্তিগত স্বার্থ নিয়ে দন্দ হয়নি,  মতের দ্বন্দ্ব ছাড়া।


জৈব রাসায়নিক অস্ত্রঃ


জৈব রাসায়নিক অস্ত্র হলো, 

"জীবাণু, ছত্রাক ও ভাইরাসের, রাসায়নিক ও জৈবিক, ক্রিয়া-বিক্রিয়ার মধ্যে সৃষ্ট এক ধরনের ভাইরাস অস্ত্র। যা ছত্রাক অথবা জীবাণুর অথবা ভাইরাসের মধ্যে ডিএনএর সংযোজন অথবা বিয়োজনের মধ্যে ভাইরাস বা সংক্রমণ কে আরো বেশি শক্তিশালী করে তোলা।  যা সংক্রমণের মাধ্যমে একটি সমাজ, জাতি অথবা রাষ্ট্রকে আক্রমণ করা। এই আক্রমণ স্থায়ী হতে পারে অথবা অস্থায়ী হতে পারে, এই আক্রমণের উদ্দেশ্য হত্যা করা হতে পারে অথবা বিকলাঙ্গ করা হতে পারে।"

অতি সহজ ভাষার যদি আমি বুঝতে যাই, ধরুন একদল পিপীলাকা কে আমরা অস্ত্র বানাতে চাই। তার জন্য আমরা পিপীলাকা কে এমন ভাবে মডিফাই করলাম যা পৃথীবির সেরা বিষয়ে বহনকারী হয়ে গেল। এই পিপীলাকা একটি বায়োলজিকেল অস্ত্র হয়ে গেল। এই রকম যত প্রকার অস্ত্র থাকবে সবি বায়োলজিকেল অস্ত্র ।

উইকিপিডিয়ার মতেঃ

জৈবিক যুদ্ধঃ

"জৈবিক যুদ্ধবিগ্রহ তথা জীবাণুভিত্তিক রণযুদ্ধ হলো মানুষ হত্যা কিংবা বিকলাঙ্গ করার উদ্দেশ্যে সামরিক যুদ্ধে জৈবিক বিষাক্ত পদার্থ কিংবা সংক্রামক অণুজীব যেমন ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং ছত্রাকের ব্যবহার।"
 

জৈব অস্ত্রঃ

"জৈবিক অস্ত্রশস্ত্র তথা জৈব-অস্ত্র বা জৈব অশনিসংকেত বলতে কোনো জীবন্ত সত্ত্বা কিংবা নিজেদের বহুগুণিত প্রতিরূপ তৈরিতে সক্ষম (যেমন- ভাইরাস, যাকে সার্বজনীনভাবে জীবিত ধরা হয় না) অজীব বস্তুকে বোঝানো হয় যা তার শিকার তথা যে জীবিত সত্বায় আশ্রিত হয় তার অভ্যন্তরে বহুগুণিত হতে ও বংশবিস্তার করতে পারে। যুদ্ধবিগ্রহে পোকামাকড় ও কীটপতঙ্গের ব্যবহারকেও জৈবিক যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।"

কেন জৈবিক অস্ত্রের ব্যাবহারঃ 


"এই জৈবিক যুদ্ধবিগ্রহের ব্যাপারটি নিউক্লিয়ার এবং রাসায়নিক যুদ্ধগুলোর থেকে আলাদা। একসাথে জৈবিক, নিউক্লিয়ার ও রাসায়নিক যুদ্ধকে এনবিসি (নিউক্লিয়ার, বায়োলজিক্যাল এন্ড কেমিক্যাল ওয়ারফেয়ার ইউজিং ওয়েপনস অফ মাস ডেস্ট্রাকশন) তথা বিপুল ধ্বংসাত্মক ফলাফলবাহী অস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে নিউক্লিয়ার, জৈবিক ও রাসায়নিক যুদ্ধ বলা হয়। এসব যুদ্ধে ব্যবহৃত কোন অস্ত্রই চিরাচরিত সাধারণ অস্ত্র নয়, যেগুলো প্রধানত তাদের বিষ্ফোরক, গতিশীল ও আগ্নেয় বৈশিষ্ট্যের দরুণ ব্যবহৃত হয়।


শত্রুসেনার সাথে যুঝে উঠতে তাদের চেয়ে বেশি পরিকল্পনা ও সামরিক কৌশলগত সুবিধা পেতে জৈবিক অস্ত্রশস্ত্রের ব্যবহার কিংবা ব্যবহারে ভয় দেখানো ফলপ্রসূ হতে পারে। শত্রুসেনার হাত থেকে নির্দিস্ট এলাকা বাঁচানোর হাতিয়ারস্বরূপ (area denial weapons) কিছু রাসায়নিক অস্ত্রের ন্যায় জৈবিক অস্ত্রসমূহও ব্যবহৃত হতে পারে। এই অস্ত্রগুলো হতে পারে মারণাস্ত্র কিংবা অমৃত্যুদায়ী এবং এর নিশানা হতে পারে একজন মানুষ, হতে পারে একদল মানুষ কিংবা একটি পুরো জনগোষ্ঠী। এই জৈবিক অস্ত্রগুলো জাতীয়ভাবে কিংবা জাতীয়তা-বহির্ভুত স্বতন্ত্র দলগুলোর দ্বারা প্রস্তুতকৃত, অর্জিত, সঞ্চিত কিংবা কার্যকর হতে পারে। জাতীয়তা-বহির্ভুত স্বতন্ত্র দলগুলোর এর সাথে এসব হাতিয়ারের সম্পৃক্ততা কিংবা কোনো জাতীয় অঙ্গরাজ্যের দ্বারা গোপনে এর ব্যবহার করা হলে তা জৈব-সন্ত্রাসবাদ হিসেবে পরিচিত।"


মোটকথাঃ


জৈব অস্ত্র হলো জৈবিক ও রাসায়নিক মিশ্রণে সৃষ্ট ভাইরাস বা জীবাণু অস্ত্র।  আর জৈবিক যুদ্ধ হলো জৈবিক অস্ত্র এবং জৈবিক ও রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহারে যুদ্ধ। যা হতে পারে অস্থায়ী অথবা দীর্ঘস্থায়ী।



আরো পড়ুন! 

[ করোনা ভাইরাস পরিচিতি, সংক্রমণ, প্রাথমিক লক্ষণ, উৎপত্তি,জৈব রাসায়নিক অস্ত্র, দ্যা আইজ অফ ডার্কনেস উপন্যাস, সাবেক ইসরায়েলি গোয়েন্দা রিপোর্ট, সর্বশেষে আমার বিশ্লেষণ। ]

[ করোনা ভাইরাস বা (COVID-19) 'এইজ অফ ডার্কনেস' উপন্যাসে যা বলা হয়েছ। ]

[ করোনা ভাইরাসের গঠন কেমন। ]

[ করোনা ভাইরাস কিভাবে মানুষের মাঝে আসলো। ]

[ করোনা ভাইরাসে প্রথম আক্রান্ত মানুষ কে? ]

[ করানো ভাইরাসের প্রাথমিক লক্ষণ ও বাচার উপায়। ]

[ সাত বছর আগে করোনা ভাইরাস আসছে বলে মানুষদেরকে হুঁশিয়ারি করেছিলেন এক ব্যক্তি। ]








No comments

Theme images by Deejpilot. Powered by Blogger.