Header Ads

Header ADS

ভারতে মুসলিমদের উপর নির্যাতনের কারণ। ||| ১ম পার্ট।

অতি সাম্প্রতিককালে আমরা দেখতেছি ভারতে মুসলিম হিন্দু মুসলিমের দাঙ্গা সৃষ্টি হয়েছে। মুসলিম যুবকদেরকে হত্যা এবং ধর্ষণ ও নারীদের যৌন হয়রানি সহ নানা ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। কখনো কখনো আমরা দেখতে পাচ্ছি রাজনৈতিক নেতাদের প্রত্যক্ষ মদদে এই ধরনের কাজ ঘটে চলছে। এর কারণ হিসেবে আমরা যে সমস্ত কারণ কে চিহ্নিত করে থাকি তা আসলে কতটুকু সঠিক, বা যুক্তিযুক্ত। যেখানে প্রতিটি মানুষ  নিজ নিজ মতের পক্ষে কথা বলে  এবং সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করে প্রকাশ করে । তাই  আমি মনে করি  এই সম্পর্কে  নিরপেক্ষ একটা  বিশ্লেষণ করা দরকার। তারই ধারাবাহিকতায়  আজকে আমি  আপনাদের সামনে  এই বিষয়টাকে  আমার সামান্য জ্ঞানের পরিসরে  খোলাসা করতে চেষ্টা করব। ইনশাআল্লাহ!

ঐতিহাসিক দন্দঃ 

আসলে আমরা যদি হিন্দু-মুসলিম সংঘাতের কারণ যদি আমরা জানতে চাই। তাহলে আমরা দেখতে পাব এর বহুবিধ কারণ রয়েছে। এর কারণটা অথবা এর শুরুটা এখন থেকে নয় ভারতবর্ষে প্রথম থেকেই হিন্দু এবং মুসলমানদের মাঝে এটা বৈরীভাব ছিল। প্রথম যখন মুসলিমরা এই ভারত বর্ষ দখল করে, তারা নিজেদের রাজত্ব কায়েম করে। তখন থেকে তাদের মাঝে এক প্রকার হিংসে এবং খোভ জ্বর উঠে।

এখানে একটা কথা উল্লেখ করা প্রয়োজন ভারতবর্ষে মুসলিমরা কেন বিজয় করেছিল? অত্যন্ত দুঃখজনক ব্যাপার হলো সত্য, ভারতবর্ষের হিন্দুরা ছিল এক টুকু  উগ্র সভাবের। তাইতো তারা বুদ্ধদের কি শক্ত হাতেই না দমন করেছিল এবং কোণঠাসা করে রেখেছিল দীর্ঘদিন ধরে। যা ইতিহাস সাক্ষী। তারই ধারাবাহিকতায় ইসলাম যখন আরবে প্রকাশিত হয় তখন ইসলামের সৌন্দর্য দেখে, বহু হিন্দুরা  ইসলাম গ্রহণ করতে থাকে। তারা বুঝতে পারে ইসলাম যদি এই ভাবে প্রসারিত হতে থাকে একদিন পুরা ভারত বর্ষ মুসলিম হয়ে যাবে। যা তাদের ইসলামী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে হিংসুটে করে তুলে।  আরব রাজত্বে বিরুদ্ধে হিংসায় ফেটে পড়ে এবং ইসলামী রাষ্ট্রের ক্ষতি সাধনের জন্য নানাবিধ তারা চেষ্টা করে। তাদের মাঝে একজন ছিল হিন্দু রাজা দাহির। তাঁর রাজত্বের লোকেরা জলদস্যু দিয়ে মুসলিম বণিকদের কয়েকবার লুন্ঠন করে, সিন্ধু নদের পাদদেশে। ইসলামী খলিফার পক্ষ থেকে পত্র প্রেরণ রাজা দাহির এতে কর্ণপাত না করে বরং মুসলিমদেরকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়। যা মুসলিমদের জন্য ভারত বর্ষ বিজয় অনিবার্য হয়ে যাই। তাইতো 720 খ্রিস্টাব্দে মোহাম্মদ বিন কাসিম এর নেতৃত্বে সিন্ধু বিজয় হয়।

সেখানেও তারা প্রতারণার আশ্রয় নেয়। সেদিন তারা যেকোনোভাবে জেনেছিল মুসলিমদের যুদ্ধ রীতি হচ্ছে কোন এলাকায় যুদ্ধ করার আগেই অ্যালান তথা প্রসার করাহয়, তিনটা শর্তঃ একঃ ইসলাম গ্রহণ করা। দুইঃ বশ্যতা স্বীকার করে যে জিয়া প্রদান। তিনঃ তলোয়ারে নির্ধারিত হবে ভাগ্য। সেদিন মুসলিমরা এই যুদ্ধ করার আগে এই ঘোষণাটি করে নি। এ কারণে তারা মুয়াবিয়া রাঃ কাছে অভিযোগ পাঠায়। মুয়াবিয়া রাঃ এর সমাধানের জন্য একজন কাজে নিয়োগ করেন এবং কাজী ঘোষণা দেন যে, মুসলিমরা ভারত বর্ষ বিজয় করে ও তথা সিন্ধু বিজয় করেও রাজত্ব কায়েম না করে চলে যাবে। এই বিচার-ফয়সালা মেনে মুসলিমরা যখন চলে যাচ্ছিল সিন্ধু ছেড়ে, তখন সিন্ধু দেশের মানুষেরা চৈতন্য ফিরিয়ে পেয়ে দলে দলে ইসলাম গ্রহণ করে। এইভাবে সূচনা হয় ভারতবর্ষের ইসলামের।

এখানে আরও একটা প্রতারণা করে, রাজা দাহিরের দুই মেয়ে তারা মুহাম্মদ বিন কাসিম এর বিরুদ্ধে, যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠালে কাশেম বিন আবু বকর শাস্তির দণ্ডে দণ্ডিত হন এবং কারাভোগ করেন। এই ছিল হিন্দুত্ববাদীদের দুইটা প্রতারণা।

যাই হোক মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর হিন্দুরা মুসলিমদের কে মেনে নিতে পারেনি এবং তারা মুসলিমদের পরাজিত করার জন্য তৃতীয় শক্তি খুজতে ছিল। যার ফলে তারা সুযোগ খুঁজতে থাকে এবং ইংরেজ সরকারের শাসনামলে ইংরেজদের কে যথাযথ সাহায্য সহযোগিতা করে। তার তার বদৌলতে বেশ, সরকারও ভারতে হিন্দুদের কে যথাযথ সাহায্য-সহযোগিতা করে, যেমন মুসলিম জমিদারি তাদেরকে দান, মুসলিমদের জমি দখল এবং রাজ্যের শাসনভার, তাদেরকে সুযোগ সুবিধা প্রদান। ইত্যাদি। 1885 সালে যখন জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন মুসলমানদের উপর নির্যাতন চরম আকার ধারণ করে। যা তৎকালীন ইংরেজ পর্যটকদের লিখিত বই-পুস্তকে পাওয়া যায়। আমি এক ইংরেজি পর্যটক এর বইতে পড়েছিলাম। উনার নামটা আমি ভুলে গেছি এই মুহূর্তে তিনি লিখেছেন 1885 সালে জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার পর তিনি ভারত সফরে যখন আসেন। তখন তিনি দেখেন "দিল্লি থেকে গুজরাট পর্যন্ত এমন কোনো রাস্তা ছিল না যেখানে মুসলিম আলেমদের লাশ ঝুলন্ত ছিল না।" তিনি এখানে আরো লিখেছেন- "যে মুসলমানদের এই দুর্দশা কারণ। ভারতীয় হিন্দুরা ইংরেজদের সাহায্য করেছিল। যার বিবরণ এখন স্বল্প পরিসরে দেওয়া সম্ভব নয়। তার বিবরণ না হয় অন্য কোন সময় সংযোগ করা যাবে। সেই সময় মুসলমানদের অবস্থা এমন ছিল ইংরেজ সরকার যদি মুসলমানদের কোনো সুযোগ-সুবিধা দানের মনঃস্থির  করত অথবা তাদের কোনো সুযোগ-সুবিধা প্রদান করত । তখনই ভারতীয় হিন্দুরা আন্দোলনের ফেটে হেঁটে পড়তো।  তার একটা প্রমাণ হলোঃ হয়তো আপনারা জেনে থাকবেন বঙ্গভঙ্গ রদ এই আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিজেই  রাজপথে নেমে ছিলেন। আর সেদিন তিনি লিখেছিলেন আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি। যা আজ আমাদের জাতীয় সঙ্গীত।  1911 সালে বঙ্গভঙ্গ রদ হওয়ার পরই ভারত লর্ড কার্জন নবাব স্যার সলিমুল্লাহ কে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, পূর্ব বাংলা একটি বিশ্ববিদ্যালয় করা হবে। তখন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলো "মূর্খের দেশে বিশ্ববিদ্যালয়।" এই হলো তাদের মানসিকতার প্রমাণ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একজন শিক্ষিত, মার্জিত এবং একজন ভাল মানুষ ছিলেন। যা এখন পর্যন্ত আমরা স্বীকার করে যাচ্ছি। তার মত মানুষের যদি মানসিকতা এমন হয়, তবে বাকিদের অবস্থা কি হতে পারে  আপনারাই ভাবুন কি এখন প্রশ্ন জাগতে পারে?

এখ৷ একটা প্রশ্ন আসতে পারে। বাংলা কে বিভাজন  কেন করা হলো?  তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিচ্ছি। আপনারা হয়তো জেনে থাকবেন, ১৯০৫ সালের আগ পর্যন্ত মুসলিমরা শিক্ষা-দীক্ষা,নসামাজিক-রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সর্ব দিক দিয়ে মুসলিমরা ছিল পিছিয়ে। আর হিন্দুরা সর্ব দিক দিয়ে এগিয়ে ছিল। এর দুইটা কারণ ছিল মুসলিমরা ইংরেজ শাসন কে অস্বীকার করে ইংরেজি শিক্ষা বর্জন করেছিল৷ পক্ষান্তরে হিন্দুরা ইংরেজদের গুলামিত্ব স্বীকার করে, সর্ব কাজে তারা এগিয়ে গিয়েছিল এবং তারা তাদের আস্থাভাজন তো লাভ করে। 1903 সালে নবাব স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিমদের এগিয়ে নেওয়ার জন্য নিখিল ভারত মুসলিম শিক্ষা কমিশন গঠন করেন এবং সেই সময় তিনি মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর থেকে মুসলিমরা ধীরে ধীরে শিক্ষাদিক্ষা ও বিভিন্ন কাজের অগ্রগতি শুরু করে। যা হিন্দুরা শাহ করতে পারেনি।

1905 সালে ইংরেজ সরকার যখন দেখল পূর্ব বাংলা অনূন্যত। পূর্ব বাংলাকে শোষণ করে হিন্দু জমিদাররা কলিকাতা অর্থ সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলছে এবং সেখানে তারা বিলাসবহুল জীবন যাপন করছে, তারা বাংলার উন্নয়নের জন্য কোন খরচ তারা করত না। বরং তারা পূর্ব  বাংলাকে শোষণের ক্ষেত্র হিসাবে  গ্রহণ করেছিল। তারা পূর্ব বাংলাকে শোষণ করে কলিকাতায় সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলতো। ফলে পূর্ব বাংলার সামাজিক অর্থনৈতিক রাজনৈতিক সকল ক্ষেত্রে অবনতি হতে থাকে এবং মুসলমানদের জীবন তখরন অত্যান্ত নিম্নমানতার দিকে দাবিতে হয়। সরকার এই ব্যবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য বাংলা কে বিভাজন করার মনস্থির করেন এবং বঙ্গভঙ্গ ঘোষণা করেন। বঙ্গভঙ্গ ঘোষণার পর হিন্দুত্ববাদীরা আন্দোলনে ফেটে পড়ে আন্দোলনের চাপের মুখে 1911 সালে বঙ্গভঙ্গ রদ করতে বাধ্য হয় ব্রিটিশ সরকার। এতে নবাব স্যার সলিমুল্লাহ অত্যন্ত ব্যাথিত হন। তখন ভারত লর্ড ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেন। তারি ধরা বাহিকতাই ১৯২১ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়  প্রতিষ্ঠা পায় । কিন্তু রবিদ্রনাথ ঠাকুর তাও সাহ্যবকরত পারেনি । তাই তো তিনি লিখেছেন "মূর্খের দেশে বিশ্ববিদ্যাল! "       

আজ পর্যন্ত।
২য় পার্ট যান একখান থেকে  

No comments

Theme images by Deejpilot. Powered by Blogger.