Header Ads

Header ADS

ভারতে মুসলিমদের উপর নির্যাতনের মূল কারণ। || ২- পার্ট

আমরা গত পর্বে আলোচনা  করেছিলাম ভারতবর্ষের হিন্দু-মুসলিমের দ্বন্দ্বের উৎপত্তিকাল। সেখানে আমরা কিছু কথা বলেছিলাম হিন্দু মুসলমানদের দ্বন্দ্বের উৎপত্তি কোন খান থেকে শুরু আমরা 1911 পর্যন্ত অর্থাৎ বঙ্গভঙ্গ রদ হওয়া পর্যন্ত আমরা আলোচনা করেছি। অতি সংক্ষিপ্ত পরিসরে আজকে আমরা সেখান থেকে আলোচনা করতে চাই যেখানে আমরা শেষ করেছি।

1911 সালে বঙ্গভঙ্গ রদ হওয়ার পরে মুসলমানদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি হতে থাকে। মুসলিমরা বুঝতে পরেছি, নিখিল ভারতে হিন্দু জাতিরা মুসলিমদের কোনভাবে সহ্য করতে পারে না। তাই মুসলিমদের মাঝে আলাদা এটা স্বতন্ত্রতা বোধ জেগে উঠতে থাকে। মুসলিমরা নিজেদের মাঝে নিজেরাই সংগঠিত হয়ে থাকে। এছাড়াও 1903 সালে মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা করে। মুসলিমলীগের মাধ্যমে তারা তাদের দাবি আদায়ের জন্য সচেষ্ট হয়। তারা বুঝতে পারে, বিচ্ছিন্ন ভাবে নিজেদের নিজেদের দাবি আদায় কার সম্ভব নয়। তাই মুসলিমরা দলে দলে মুসলিইমলীগের ছায়া তলে যোগদান করে। যার ফলে মুসলিমরা হিন্দুদের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দাঁড়িয়ে যায়। ফলে তাদের মাঝে প্রতিযোগিতা আরো স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এরপর থেকে হিন্দু এবং মুসলিম এর বিভিন্ন সময় সংঘাত চলতে থাকে। যতবারই ব্রিটিশ সরকার মুসলমানদের কোন সুযোগ সুবিধা দিতে চেয়েছিল, ততোবারই হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল কংগ্রেস তার বিরোধিতা করে এসেছে এবং সরকারকে মুসলিমদের সুযোগ দানে বিরত রাখার চেষ্টা করতো। এইভাবে হিন্দু মুসলিম সংঘাত ১৯৪৭ পর্যন্ত চলতে থাকে। এর মাঝে কয়েকজন নেতা ছিলেন, তারা ছিলেন ভিন্ন, তাদের মাঝে নেতাজী সুভাষ বসু ও গান্ধীজির নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। সত্যিকার অর্থে হিন্দু মুসলিমদের সম্প্রীতি বন্ধে আবদ্ধ করার এবং তাদেরকে ঐক্য করে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন তীব্র করার জন্য তারা কাজ করে গেছেন। একজন প্রখ্যাত সৈনিক ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাস অনেকাংশে তার কাছে ঋণী। এভাবে চলতে চলতে 1035 সালে এসে হিন্দু মুসলিমদের মাঝে দাঙ্গা বাঁধে যা ব্যাপক আকার ব্যাপক আকার ধারণ করলে, 1940 সালে নিখিল ভারতীয় বিরোধীদলীয় সম্মেলনে লাহোর প্রস্তাব উত্থাপিত হয়। এই প্রস্তাব প্রস্তাবে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ দ্বিজাতিতত্ত্বের উত্থাপন করে। এই তথ্য প্রকাশ করেন সাম্প্রদায়িকতা আর প্রকট আকার ধারণকরে। দ্বিজাতিতত্ত্বের মূল কথা ছিল এই যে, "হিন্দু মুসলিম আলাদা জাতি। তাদের মাঝে কখনো সম্প্রীতির বন্ধন সম্ভব নয়। তাদের প্রত্যেকের কৃষ্টি কালচারব আলাদা, তারা একে অপরের ঘরে খাইনা, একে অপরের সংস্কৃতি ধারণ করে না, একে অপরের সাথে আত্মীয়তা সম্পর্কে আবদ্ধ হয় না।, সুতরাং তারা আলাদা জাতি। তাই তাদের জন্য আলাদা রাষ্ট্রের আভাস ভূমির প্রয়োজন।" এই এই তথ্য প্রকাশের পর হিন্দু মুসলিমদের মাঝে দাঙ্গা আরো প্রকট আকার ধারণ করে। এই প্রস্তাবের পর ইংলিশ সরকার বুঝতে পারে সত্যিকার অর্থে হিন্দু মুসলিমদের মাঝে সম্প্রীতির বন্ধন সম্ভব নয় এবং তাদেরকে আলাদা রাষ্ট্রে দিতে হবে। 1947 সালে শুধু ধর্মের ভিত্তিতে ( দ্বিজাতিতত্ত্বেেের ভিত্তি করে ) আলাদা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন। ভারত পাকিস্তান নামে দুটি আলাদা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা পায়।


এই সংক্ষিপ্ত ইতিহাস আমাদের কি শিক্ষা দেয়? এ সংক্ষিপ্ত ইতিহাস আমাদের যা শিক্ষা দেয় তা হল ভারতের হিন্দু জাতি কখনো মুসলিমদের উন্নতিকে  সহ্য করতে পারেনি। আমরা ঘটনা প্রবাহের দিকে তাকা দেখতে পাব, হিন্দুরা এখনো মুসলিম উন্নতি সহ্য করতে পারে না। এটাই বাস্তব সত্য। তাই আজও ভারতে হিন্দু মুসলিমের ঝগড়া লেগেই আছে। আপনি যদি আরেকটু গভীরভাবে লক্ষ্য করেন, তাহলে দেখতে পাবেন বাংলায় বসবাসকারী বাংলা হিন্দুরা, বাংলাদেশের চেয়ে ইন্ডিয়া কে ভালোবাসে। তারা মনে করে ইন্ডিয়া তাদের দেশ। অথচ যা তাদের জন্য সমীচীন নয়।  তাদের অনেকেই বাংলাদেশ থেকে ইন্ডিয়াতে গিয়ে বাংলাদেশের নামে নানান মিথ্যাচার করে থাকে। যাতে ভারগীয় হিন্দুদের মন গলানো যায়। আর তাদের মিথ্যাচারের কথা গুলো ধরে, ভারতে হিন্দুরা বাংলাদেশের উপর ঘৃণা আরোপ করে এবং তারা প্রচার করে বেড়ায়, বাংলাদেশের হিন্দুরা শান্তিতে নাই। ফলে সে দেশে হিন্দুদের ও মুসলিমদের মাঝে সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি হয়। অথচ বাংলাদেশ থেকে যে সমস্ত হিন্দুরা ইন্ডিয়ায় চলেগেছিল, তারা সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশের চেয়েও খারাপ অবস্থানে আছে। তাদের অবস্থা সেখানকার মানুষদের মাঝে খুবই নাজুক। আমরা যতদূর জানি ইন্ডিয়া স্থায়ী বাসিন্দারা বাংলাদেশী হিন্দুদের মন দিয়ে গ্রহণ করেনি। এর পরও তারা বাংলাদেশ সাথে বেইমানি করে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধচারণ করে থাকে। তারা এ কাজ কেবল এই জন্য করে থাকে ইন্ডিয়ান হিন্দু ভাইদের সহানুভূতি পাওয়ার জন্য।

আমরা যখন অনলাইনে ওপারের মানুষের সাথে কথা বলি। তখন তারা আমাদের কাছে দাবি করে বাংলাদেশের হিন্দুরা শান্তিতে নেই। অথচ বাস্তবতা তার বিপরীত। একটা প্রশ্ন জাগতেই পারে, তবে কেন হিন্দুরা বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে যাচ্ছে? কারণ এর বই বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে।

১| মুসলিমদের প্রতি তাদের অন্ততরে বিরূপ ধারণাঃ
প্রথম কারণ হলো মুসলিমদের প্রতি বাংলাদেশী হিন্দুদের অন্তরে বিরূপ ধারণা রয়েছে। যা অতীতকাল থেকে হয়ে আসছিল আমরা একে বলতে পারি পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত। আপসোস! তার আজও এই সংকীর্ণ মনা হতে বের হয়ে আসতে পারেনি।   

২| সংখ্যাগরিষ্ঠতাঃ
অধিকাংশ মানুষ চাই, তার মত সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাক। কারণ সে মনে করে, তার মতটাই সঠিক। যদিও তা ১০০%  সঠিক নয়। এছাড়াও সংখ্যাগরিষ্ঠ থাকলে নিজের ভুল বার্তা কেউ সঠিক বলে চালানো যায়।
আর একটা বিষয় হল পৃথিবীর যেকোন প্রান্তে সংখ্যালঘু চাপে থাকে।। সেটা কম অথবা বেশি, হয়তো সেটা সহনশীলতা মাত্রায় থাকে অথবা থাকেনা। হিন্দুদের এক্ষেত্রে তারা একেবারেই তাদের সহনশীলতার অভাব ল। তাছাড়া আর একটা কারণ হল, অতীতকাল থেকে হিন্দুরা মুসলিমদের কে দমিয়ে রাখার প্রবণতায় ছিল। আজও তারা সেই প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি।

৩| ধর্মীয় টানঃ
যে কারণে হিন্দুরা বেশিভাগ দেশান্তর হয়ে ভারতে যেতে চাই। তা হল ধর্মীয় টান। কারণ সনাতন ধর্মে বেশি তিত্তস্থানগুলো ভারতে। যার ফলে তাদের মন ভারতের দিকে ঝুঁকে আছে। যেমন মুসলিমদের মন কাবার সাথে ঝুঁকে আছে।

৪| জাত প্রথাঃ
বাংলাদেশ থেকে ইন্ডিয়া স্থানান্তরিত হয় একটা কারণ আছে তাদের সেটা হল হিন্দু সম্প্রদায়ের জাত প্রথা। যার কারনে তাদের আত্মীয়তা করতে অনেক অসুবিধা হয়। এ কারণে আমরা দেখতে পাই অনেক হিন্দু মেয়েদের বিয়ে হতে অনেক সমস্যায় পড়ে। এমন কি কখনো কখনো তারা অনুপযুক্ত পাত্রের হাতে মেয়েকে সমর্পনন করতে হয়। কারণ বাংলাদেশে সগোত্রীয় প্রতিষ্ঠত পাত্র পাওয়া নকঠিন।কিন্তু ভারতে এর সংখ্যা পর্যাপ্ত। আমার চোখের দেখা দু চারটা পরিবার আছে যাদেরকে আমি দেখেছি এবং যাদেরকে আমি চিনতাম। তারা এদেশে ভালই ছিল এবং মুসলিমদের চেয়ে তাদের অর্থনৈতিক সব দিকে ভালো ছিল কিন্তু তা সত্ত্বেও সবি বিক্রি করে ভারতে চলেগেছে। চিত্তাবাবু বিশাল ব্যাবসায়ী ছিল। আমার এলাকার কেউ পড়লে চিনবেন। একমাত্র কারণ তাদের মেয়েদের বিয়ে কে কেন্দ্র করে এবং বাংলাদেশ থেকে মেয়েদের উচ্চ শিক্ষিত করে কলকাতায় গিয়ে বিয়ে দেয়। তার পর জামাতা তাদেরকে কলিকাতায় নিয়ে যায়। শুনেছি ওখানে ও নাকি বড় ব্যাবসা আছে। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা।

সুতরাং তাদের দেশান্তরীত হবার অন্যতম কারণ হচ্ছে জাত প্রথা। যা কঠিন ভাবে মান্য করা হয় আপনারা হয়তো দেখে থাকবেন গত ২৫/০৬/২০১৯ ইং ভারতের মধ্যপ্রদেশে একটা মেয়েকে তারক গোত্রের বাইরের ছেলে বিয়ে করা অপরাধী তার ফ্যামিলির আটজন মেম্বারই প্রকাশ্যে কিভাবে অত্যাচার করেছিল যেটা ভিডিও টি ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়েছিল।

৫| ব্যাবসা বানিজ্যঃ
আমরা ছোটবেলা থেকে দেখেছি বাংলাদেশের ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বড় বড় সমস্ত প্রতিষ্ঠান হিন্দুদের। যখন মহাজনী প্রথা চালু ছিল। দরিদ্র লোকেরা তাদের থেকে ঋণ নিয়ে তাদের নিজেদের ব্যবসা-বাণিজ্যসহ তাদের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করত। বিনিময় তাদেরকে মোটা অংকের সূদ দিতে হতো। ব্যাংকিং ব্যবস্থা প্রবর্তনের ফলে বাংলাদেশে যে মহাজনী ব্যবস্থা ছিল তা  উঠে যাই। তখন বাংলায় তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য কমতে থাকে হলে তারা পূর্ব সঞ্চিত ইন্ডিয়ান সম্পত্তি নিয়ে ইন্ডিয়াতে ব্যবসা বাণিজ্য করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করে। ব্যবসা-বাণিজ্যের বাণিজ্যের তাগিদে মূলত ইন্ডিয়া গামী হয় তারা।

৫| ধর্মান্তরিত হওয়ার প্রভাবঃ
বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম হওয়ার কারণে হিন্দুরা মুসলিমদের কৃষ্টি কালচারের সাথে পরিচিত হতে থাকে। খনো কখনো দেখা যায় মুসলমানদের সাথে মিশতে মিশতে হিন্দু ছেলে মেয়েদের মাঝে মুসলমানিত্ব দেখা দেয়। অনেক ক্ষেত্রে ধর্মান্তরিত হওয়ার প্রবণতা শুরু হয়। কারণ ইসলাম যুক্তি প্রমাণিত হিন্দু ধর্ম চেয়েও শ্রেষ্ঠ। যার ফলে অনেক সময় দেখা যায় হিন্দু মেয়েরা মুসলিম ছেলেদের কে বিয়ে করে মুসলিম হয়ে যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মেয়েদের ঘটে ছেলেরা একটু কমি হয়। তাই তারা তাদের ছেলেমেয়েদের কি মুসলিম হওয়ার প্রবণতা থেকে রক্ষা করতে ভারতে পাড়ি জমায় ।

এছাড়াও আরো বহুবিধ কাটণ থাকতে পারে যার অনেক কিছু জানা ও অজানা। অন্য কোন সময় আলোচনা করা যেতে পারে।     

বলছিলামঃ ভারতের মুসলিমরা সর্বদা নির্যাতিত হয়েছিল ।তার প্রমাণ আমাদের জানা। গরুর মাংস খাওয়ার অপরাধে হত্যা, গোমাংস বহন করা অপরাধ হত্যা, ত্যাবেজ আনসারী হত্যা, মাদ্রাসা শিক্ষককে লাঞ্ছিত করা, "জয় শ্রীরাম" ধনী না দেওয়ার কারনে হত্যা ও লাঞ্ছিত করা, প্রকাশ্যে মুসলিম নারীদের লাঞ্ছিত করা, সাত বছরের ইমামের মেয়েকে ধর্ষণ, যা প্রমাণ করে মুসলিমরা নির্যাতিত। নির্যাতিত মুসলমান কখনো কখনো তাদেরকে সংগঠিত দেখা যায়, ভারতীয় দের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, ভারতের সকল অপরাধ ( এখানে সামাজিক অপরাধ)  নাকি মুসলিমদের দ্বারা হয়ে থাকে। তার বদলা নিচ্ছে হিন্দুরা। তাদের মতে এটা কোন জাতিগত নিধন নয় বরং সামাজিক ভয়কট। আমার প্রশ্ন হল যদি তারা অপরাধ করেও থাকে তবে তার জন্য অবশ্যই সে দেশের আইন আছে আইনের মাধ্যমে বিচার হবে। এখন পর্যন্ত আমি একটা ভিডিওতে দেখি নাই মুসলিমদের কোন ক্রাইম করছে ধর্মীয় নামে। সন্ত্রাসীদের কথা ভিন্ন। অথচ হিন্দুদের সমস্ত ক্রাইম গুলো ধর্মীয় নেওয়ানামে হয়ে থাকে। যা মুসলিমদের মাঝে হয় হয়নি। তাই একে ধর্মীয় উগ্রবাদ ছাড়া আর কিছু বলা যায় না। মুসলিমদের দ্বারা সংঘটিত হয় সে অপরাধ গুলো কোন টসই ধর্মীয় শ্লোগানে হয়নি। বরং সেগুলো সব ব্যক্তিগত কারণে সংঘটিত হয়েছে। অথচ মুসলমানদের সাথে হিন্দুদের যে অত্যাচারের চিত্র বের হচ্ছে, তার প্রতিটা ই ধর্মীয় শ্লোগানে হয়ে থাকে।

আবার ভারতের হিন্দুদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করে থাকে বাংলাদেশের হিন্দুরা হিন্দু মেয়েরা মুসলিমদের কর্তৃক নির্যাতিত। আমি বলব তাদের আমি তাদেরকে বলবো এর কোন টাই ধর্মীয় শ্লোগানে হয়নি। আল্লাহু আকবার বলতে বাধ্য করা হয়নি,  তারপরে গোমাংস করতে বাধ্য করা হয়,   নামাজ যেতে বাধ্য করা হয়নি, মুসলিম হতে বাধ্য করা হয়নি, এমনটি কখনো হয়নি, কিন্তু ভারতে কি হচ্ছে? গরুর মাংস বহন করায় হত্যা, "জয় শ্রীরাম" ধ্বনির নামে হত্যা, মুসলিম বলে তাদের সাথে কোন ঠাসা করা, মুসলিম বলেই তাদের ছেলে মেয়েদেরকে ধর্ষণ করা হচ্ছে, মুসলিম বলি তাদেরকে চাকরিতে ঢোকানো হচ্ছে না। কিন্তু বাংলাদেশ এ ভিন্ন চিত্র।  সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী চাকরির শতকরা 30% হিন্দুরা দখল করে আছে। এর কারণ হচ্ছে তাদেরকে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সেই স্থানে ভারতে কত পার্সেন্ট মুসলিম সরকারি কর্মচারী চাকরিতে রয়েছে। আমার জানামতে এখনো বাংলাদেশে এমন কোন ঘটনা ঘটেনি শুধু হিন্দু হওয়ার কারণে, কোন নারী বা কোন হিন্দু মেয়েকে চাকরি হতে বাদ করা  হয়েছে। সুতরাং আমি বলবো ভারতে জাতিগত দাঙ্গার পিছনে হিন্দুদের মনোভাব সবচেয়ে বেশি দায়ী। তারা কোনোভাবেই মুসলিমদেরকে সহ্য করতে পারে না। যার ফলে ভারতে জাতিগত দাঙ্গা দেখা দেয়।  এতক্ষণ আমরা যে সমস্ত কারণ গুলো তুলে ধরলাম, তার সবগুলো ঐতিহাসিক কারণ। ঐতিহাসিকভাবে ভারতবর্ষে হিন্দু এবং মুসলিম কখনো এক হতে পারেনি। তাদের মাঝে একটা একটা দেওয়াল ছিল। যা সর্বদা তাদের কে একে অপরের প্রতি হিংসুটে করে তুলেছিল।

ভয়ঃ

মুসলিম নিধন অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা যায়, তাদের মধ্যে ভয় কাজ করে। তাদের মাঝে অনেকগুলো ভয় কাজ করে, যার সামান্য চিত্র তুলে ধরা হলোঃ

১| সংখ্যাদিক্কের ভয়ঃ
হিন্দুদের মনে সর্বদাই মুসলমানদের প্রতি একটা ভয় ভীতি কাজ করে। তারা মনে করেন মুসলিমদের সংখ্যা বৃদ্ধি পলে,  ভারতবর্ষের ক্ষমতা চলে যাবে মুসলিমদের হাতে। যা নিয়ে হিন্দুরা রীতিমত উদ্বিগ্ন তাই তারা মুসলমানদের সংখ্যা কমানোর জন্য ব্যাপক লেখালেখি এবং চাপাচাপি করে থাকে। সমস্যা হল,  ইসলামে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সমর্থিত না হওয়ায় সাধারণত মুসলিমদের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। যার জন্য তাদেরকে অনেক তৃষ্কার ও সহ্য করতে হয়।

ইসলামে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিঃ
ইসলামে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি আর প্রচলিত জন্ম নির্ণয় পদ্ধতির মাঝে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে প্রচলিত জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি হলো স্থায়ী বা স্থায়ীভাবে জন্ম নিয়ন্ত্রণ। নয়তোবা সন্তান নেওয়ার বলে চিরস্থায়ী ভাবে সন্তান না নেওয়ার পদ্ধতি। যার উদ্দেশ্য থাকে  সন্তান সন্ততি ভরণপোষণ দিতে না পারি  সেজন্য  হরিপদ জীবন ব্যবস্থা

আর ইসলামে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি হলো সন্তানের হক রাখার জন্য অর্থাৎ সন্তান দান দুই বছর পূর্ণ করার জন্য ভূমিষ্ঠ এরপর থেকে দুই বছর বিরতি গ্রহণ করা আর স্ত্রীর শারীরিক সামর্থ্য তার উপর নির্ভর করে পরবর্তী সন্তান নেওয়া অথবা সন্তান না নেওয়া থেকে বিরত থাকা এটা হল ইসলামে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি উদ্দেশ্য কত ভাবে যথেষ্ট পার্থক্য বিদ্যমান ইসলামে জন্মনিয়ন্ত্রণ উদ্দেশ্য হলো সন্তানের স্তন্নদানের পূর্ণকরা ও স্ত্রীর সরীর সামর্থ নির্ভর। যা বৈধ। ইসলামি পদ্ধতি মতে সন্তান গর্ভে আসার পর থেকে ১০ মাস, সন্তানের দুগ্ধদানে কম পক্ষে ২ বছর। মোট এক সন্তান হতে অন্ন সন্তানে গ্যাপ ৩ বছর রাখা যেতে পারে, শর্ত থাকে  যদি স্ত্রী সুস্থ্য থাকে। আর যদি অসুস্থ্য বা অসমর্থ হয় তবে আরো বেশি।

ভারতীয় হিন্দুদের সাথে কথা বলে জানা গেল তাদের দাবি দেশ বিভক্তির  সময় পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম সংখ্যা ছিল 17% বর্তমানে তারা সংখ্যায় 30% দাঁড়িয়েছে তাই তারা দাবি করছে এখন তারা সরকার গঠন করবে মুসলিমরা সরকার গঠন করে কিনা এই ভয়ে হিন্দুত্ববাদীরা অস্থির। ধরে নিলাম যদি মুসলিমরা সরকার গঠন করে তবে হিন্দুদের সমস্যা কি? তারা তো তারা তো পশ্চিম বঙ্গের নাগরিক গণতান্ত্রিক নিয়ম অনুযায়ী তাদের সরকার গঠনের অধিকার আছে। তবে যদি তারা সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে কিন্তু এই ভয় হিন্দুরা তাদের কে নিধন করার জন্য সর্বপ্রকার প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। এটা কি অন্যায় বা জুলুম নয়। এই আলোচনা থেকে বুঝা যায় ভারতে মুসলিম নির্যাতন অন্যতম কারণ হল মুসলিমদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া

এখন আপনার একটা প্রশ্ন আসতে পারে মুসলিমদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে কেন কারণ হলো সারা পৃথিবীতে ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে তাও যারা ইসলাম গ্রহণ করছে তারা তারা অধিকাংশ যুবক তাদের প্রত্যেকের বয়স 25 থেকে 30 এরই মাঝে নারীদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি এখন প্রশ্ন হল যারা ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করছে তারা কি ভারতের নাগরিক নয়। তাদের কি রাষ্ট্র গঠন অথবা ভারতীয় রাজনৈতিক কার্যক্রমে তাদের অধিকার নাই। যদি থেকে থাকে তবে তাদেরকে নিধরণ করার জন্য কেন এত কঠিন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নাকি এর পিছনেও আরো  কারণ আছে।



 আজ এ পর্যন্ত।

আল্লাহ হাফেজ

৩য় পার্টে যান    

No comments

Theme images by Deejpilot. Powered by Blogger.