গাজওয়াতুল হিন্দ ও আমাদের করণীয়
গাজওয়াতুল হিন্দ অবশ্যই আগামীতে সমৃদ্ধ হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। একজন আলেমগণ ধারণা করেন যে গাজওয়াতুল হিন্দ সংগঠিত হয়ে গিয়েছে। তাদের দাবি কাশেম বিন আবু বকর এর নেতৃত্বে 720 হিজরীতে সিন্ধু বিজয়ের যে সুর যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল, তাই ছিল গাজওয়াতুল হিন্দ। কিন্তু আমরা কোরআন এবং হাদিসকে সামনে রেখে, সমসাময়িক পরিস্থিতিকে বিশ্লেষণ করলে বুঝতে পারি যে, এই যুদ্ধে এখন সংঘটিত হয়নি তার সামনে সংঘটিত হবে।
তবে হিন্দুস্থানের যুদ্ধ নিয়ে তালেবান এবং আইএসএস এত বেশি বাড়াবাড়ি করছে যে, তারা তাদের গণহত্যাকে গাজওয়াতুল হিন্দ এর সাথে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করছে। গাজওয়াতুল হিন্দ সম্পর্কে আমি যখন ধারণা লাভ করি তখন থেকে এর প্রতি আমি সুদৃঢ় বৃষ্টি দেখেছি। তালেবান এবং আইএসএস তারা তাদের কিছু কর্মকাণ্ডকে শরিয়াসম্মত করার জন্য এলহাম একটি দলিল উপস্থাপন করে। তারা বলতে চাচ্ছেন যে, এলহামের মাধ্যমে তাদের নেতাগণ আল্লাহর পক্ষ থেকে অনেক কিছু জেনে থাকেন। যা তাদের শরীয়তের দলিল হিসেবে গ্রহণ করে থাকেন। অথচ শরীয়তের দলিল হল তাই যা আল্লাহ এবং তার রাসুল থেকে প্রমাণিত। আমরা ইলহাম কে কখনো শরীয়তের দলিল হিসেবে গ্রহণ করি না। এলহাম আল্লাহর পক্ষ থেকেও হতে পারে, আবার শয়তানের পক্ষ থেকেও হতে পারে। তাই একে বিচার বিশ্লেষণের মাধ্যমে এবং শরীয়তের দলিল এর সাথে সামঞ্জস্যের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়।
এছাড়াও যদি আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে তাহলেও তা সাময়িক সমস্যা সমাধানের জন্য হতে পারে সেটা চিরকালীন সমস্যা সমাধানের জন্য নয়। তাই এটার দলিল হতে পারে না। যেহেতু ইসলাম পরিপূর্ণ তথা মোকাম্মেল। তাই যদি এলহামকে দলিল হিসেবে গ্রহণ করা হয়, তাহলে বুঝা যায় যে, ইসলাম মোকাম্মেল হয়নি। অথচ মহান আল্লাহ তা'য়ালা বলেন, "আজকে আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করলাম।" সুতরাং দিন পরিপূর্ণ। ইলহাম দিনের সাথে কোন সমঞ্জস্য নয়।
এবার আসুন গাজওয়াতুল হিন্দ কখন এবং কিভাবে সংঘটিত হতে পারে?
গাজওতুল হিন্দ তখনই সংঘটিত হবে। যখন হিন্দুস্থানের মুসলিমদের উপর চরম নির্যাতন শুরু হবে। হিন্দুস্থান এই একটা অরাজকতা রাজনৈতিক অবস্থার সৃষ্টি হবে। এখানে মুসলিমরা উদ্বাস্তু হয়ে যাবে। তাদের শেষ আশ্রয়টুকু পর্যন্ত তখন থাকবে না। মোনাফেক নামের যে সমস্ত মুসলিম গুলো আছে তারাও তখন দিশেহারা হয়ে এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথ খুঁজতে মহান আল্লাহর কাছে একজন নেতার জন্য প্রার্থনা করবে। কেননা নেতা গ্রহণের মানসিকতা যতক্ষণ পর্যন্ত তৈরি হবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে নেতা আসার সম্ভাবনা থাকে না।
আর তখনই মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন এই দিশেহারা মানুষগুলোর জন্য একজন নেতা পাঠাবেন। সেই নেতার নেতৃত্বে ভারত বর্ষ মুসলিমরা বিজয় করবেন। আর এটা সংঘটিত হবে কেয়ামতের পূর্বমুহূর্তে। সম্ভবত এটা ইমাম মাহাদির সমসাময়িক সংঘটিত হবে। এতেই সম্মানিত ইমামের সমর্থন থাকবে। মহান আল্লাহর প্রদত্ত সেই নেতা সম্ভবত সেই সম্মানিত ইমামের সাথে বিজয়ের পরে মিলিত হবেন।
আমাদের করণীয়
আমাদের এখন করণীয় হবে, অপেক্ষা করা, যতদিন না ভারত বর্ষ একটি গুলোযোগপূর্ণ রাষ্ট্রে পরিণত না হয়। তবে মনে রাখতে হবে যে, আমরা যেন সেই গুলোযোগের কারণ না হয়। অর্থাৎ আমরা যেন সেই কাঙ্খিত গোলযোগ কে ডেকে না আনি।
কেননা মহান আল্লাহ তায়ালা কিয়ামত হবে একথা বলেছেন, কেয়ামতের আলামত গুলো প্রকাশ পাবে এ কথা বলেছেন। কিন্তু তিনি একথা বলেন নি যে, তোমরা কেমন আলামতগুলো প্রকাশ কর তোমাদের নিজেদের মাধ্যমে।
ঠিক তেমনি ভারত বর্ষ একটি গুলোযোগপূর্ণ রাষ্ট্রে পরিণত হবে। তবে মহান আল্লাহতালা একথা বলেনি যে, তোমরা একে গোলযোগপূর্ণ রাষ্ট্রে পরিণত করো।
তাই আমাদের উচিত হবে, অপেক্ষা করা, যতক্ষণ না কাঙ্খিত সময় আসে। আমরা সেই ভাবে করব, যে ভাবে কোরআন এবং হাদীসে আমাদের অপেক্ষা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
হাদিসে আমাদেরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গাছের গোড়া শিকড় কামড়ে ধরতে, তলোয়ারের শান ভেঙে ফেলতে, এরপরেও যদি ফেতনায় অংশগ্রহণ করতে বাধ্য করা হয়, তবে ঘাট পেতে দিতে, তবুও ফেতনায় যেন অংশগ্রহণ না করি।
ঠিক আমাদেরকে এই ভাবেই, অপেক্ষা করতে হবে, যতক্ষণ না কাঙ্খিত সময় আমাদের হাতে এসে ধরা দেয়।
No comments